[প্রায় এক যুগ আগে ভারতের বিশিষ্ট লেখিকা মহাশ্বেতা দেবীর সঙ্গে প্রয়াত লেখক আখতারুজ্জমান ইলিয়াসের একটি দীর্ঘ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এই অসমাপ্ত সংলাপে উঠে আসে মহাশ্বেতা দেবীর জীবন, কর্ম, সাহিত্য ও সংশ্লিষ্ট নানা ভাবনা। বাংলাদেশ লেখক শিবিরের সাহিত্য পত্রিকা ‘তৃণমূল’ এর পঞ্চম সংখ্যা, মার্চ ২০০১ সালে সংলাপটি প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটি সম্পাদক আনু মুহাম্মদের অনুমতিক্রমে ‘আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের নেয়া মহাশ্বেতা দেবীর সাক্ষাৎকার’ শীর্ষক লেখাটি সংক্ষিপ্ত আকারে ধারাবাহিকভাবে এই প্রথম আন্তর্জালে প্রকাশিত হচ্ছে। -- অনুলেখক]
পূর্বকথা
০২. মহাশ্বেতা দেবী: ...মুন্ডাদের মধ্যে, আমি খেরিয়াদের মধ্যে যে ধরণের কাজ করি, সেরকম কাজ করার ছিল না। কিন্তু ওদের সংগঠিত করার ছিল। সেটা আমি সব সময় বিশ্বাস করি, ওরা নিজেরাই সংগঠিত হোক। মিনিমাম কতোগুলো কাজের ভিত্তিতে ওরা নিজেরাই সংগঠিত হোক। ওদেরকে পলিটিক্যাল ফোর্স বলে মনে করা হতো। সেটা সব সময় মিথ্যাও হয়নি।
তাই...মুন্ডা গেল...অঞ্চলের দিকে মুন্ডা, ওঁরাও সব আর মাঝামাঝি তো সব চলছেই; ইট ভাটার শ্রমিক, সেসব ইনভেস্টিগেট করে লেখাটেখা, কংক্রিট কাজের মধ্যে আমি বেশী বলবো যে ‘ক্রিমিনাল ট্রাইব’ এ শব্দের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষিত হল।
[প্রায় এক যুগ আগে ভারতের বিশিষ্ট লেখিকা মহাশ্বেতা দেবীর সঙ্গে প্রয়াত লেখক আখতারুজ্জমান ইলিয়াসের একটি দীর্ঘ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। এই অসমাপ্ত সংলাপে উঠে আসে মহাশ্বেতা দেবীর জীবন, কর্ম, সাহিত্য ও সংশ্লিষ্ট নানা ভাবনা। বাংলাদেশ লেখক শিবিরের সাহিত্য পত্রিকা ‘তৃণমূল’ এর পঞ্চম সংখ্যা, মার্চ ২০০১ সালে সংলাপটি প্রকাশিত হয়। পত্রিকাটি সম্পাদক আনু মুহাম্মদের অনুমতিক্রমে ‘আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের নেয়া মহাশ্বেতা দেবীর সাক্ষাৎকার’ শীর্ষক লেখাটি সংক্ষিপ্ত আকারে ধারাবাহিকভাবে এই প্রথম আন্তর্জালে প্রকাশিত হচ্ছে। -- অনুলেখক]
আমরা যখন মায়াদ্বীপে পৌঁছাই, তখন দুপুর। মেঘনার ঘোলা জলের মতোই আকাশও কিছুটা ঘোলাটে। টানা বৃষ্টির পরও আকাশের মুখ গোমড়াভাব যেনো কাটছেই না। নদীর বাতাসও কেমন যেনো থমকে আছে বলে মনে হয়।
দুটি বিশাল ট্রলার প্রায় একশ ‘ঢাকার মানুষ’ নিয়ে কবি শাহেদ কায়েসের দ্বীপটিতে পৌঁছানোর পর আমাদের চোখে পড়ে চারিদিকে সবুজ আর সবুজ। সামনে দিগন্তজোড়া মাঠ, একপাশে গ্রামের আভাষ। দূরে এক চিলতে মেঘনা, কি এক আশ্চর্য উপায়ে রোদ চুরি করে ঝলসে যাচ্ছে।
আগত দলটিকে স্বাগত জানাতে চরের মানুষ প্রস্তুত। মাঠের একপাশে লাল-নীল ডোরাকাটা ছোট্ট শামিয়ানারা নীচে সারি সারি প্লাস্টিকের চেয়ার। ভসভসে শব্দের মাইকে ভেসে আসছে মোবাইল ফোনে বাজানো পল্লীগীতি। আমাদের দলের নারী-পুরুষেরা সাংবাদিক, লেখক, ব্লগার, কবি, শিক্ষক, ব্যংকারসহ নানান পেশার। দলে শিশুও রয়েছে আট-দশজন। তবে দল সদস্য, মায়াদ্বীপে জড়ো হওয়া আমাদের তখন একটাই পরিচয় -- আমরা কবি শাহেদ কায়েসের বন্ধু।
গারোরা বাঙালিদের মতো স্বাভাবিক খাবারই খায়। খাসিরা বাবাকে দেবতা মনে করে পূজা করে। ছেলেরা পরে পকেট ছাড়া জামা ও লুঙ্গি। ম্রোরা সাধারণত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। পুরুষরা সাদা খাটো কাপড় পরে। তাদের অন্যতম সুস্বাদু খাবারের নাম 'নাপ্পি'। ত্রিপুরাদের ঘর সাধারণত চাকমা ও মারমাদের তুলনায় উঁচু। ত্রিপুরা শিশুরা 'খিলা' (গিলা) নামের বিচি দিয়ে খেলতে ভালোবাসে। গারো ও খাসিদের নিজস্ব বর্ণমালা নেই।
তোমার ভাঁজ খোলো, আনন্দ দেখাও, করি প্রেমের তর্জমা/ যে বাক্য অন্তরে ধরি নাই দাঁড়ি তার, নাই কমা
বৃষ্টিস্নাত কচি ধানের চারাগুলো বাতাসে মায়াবি দোল খাচ্ছে। সবুজে চোখ জুড়িয়ে যায়। অহরাত্র অক্লান্ত পরিশ্রম মুহূর্তেই যেনো উবে যায় একেবারে।
সাত-সাতটি বছর নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সার, মাটি, বীজতলার মান যাচাই, অন্যের ভূঁইচাষের পূর্ব অভিজ্ঞতা তো আছেই। একেই পুঁজি করে এবার নিজের হাতের চাষাবাস। এর মাধুর্যই আলাদা। মমতাটি শিশুর প্রতি পিতার বাৎসল্য সম প্রায়।
“আপোষ করতে, করতে মানুষ ক্রমেই ছোট হয়ে যায়”...
আমার সাংবাদিকতার হেডমাস্টার, রাঙামাটির প্রবীণ মুক্তিযোদ্ধা-সাংবাদিক সুনীল কান্তি দে ঠিক এই কথাটিই মোটা লাল হরফে সদর দরজায় লিখে রেখেছেন।
“আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসের” কর্মসূচিতে শনিবার দূর দূরান্ত থেকে ভাপসা গরমে তীব্র যানজট ঠেলে পাহাড় ও সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠির ভাইবোনেরা ঐতিহ্যবাহি সাজ-পোষাকে ঢাকায় এসেছিলেন শুধু জানান দিতে, “এই দিনটি আমাদের!” কিন্তু তাদের সব হাসি-গান, আনন্দ-উচ্ছাস মুহূর্তেই যেন ম্লান হয়ে যায়। ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউটশনে অনুস্ঠান স্থলে দুপুর নাগাদ খবর এলো, পাহাড়ে রাজনৈতিক অভিবাসিত সেটেলার বাঙালিরা খাগড়াছড়ির মাটিরাঙার অন্তত পাঁচটি পাহাড়ি গ্রামে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে!...