তোমার ভাঁজ খোলো, আনন্দ দেখাও, করি প্রেমের তর্জমা/ যে বাক্য অন্তরে ধরি নাই দাঁড়ি তার, নাই কমা
বৃষ্টিস্নাত কচি ধানের চারাগুলো বাতাসে মায়াবি দোল খাচ্ছে। সবুজে চোখ জুড়িয়ে যায়। অহরাত্র অক্লান্ত পরিশ্রম মুহূর্তেই যেনো উবে যায় একেবারে।
সাত-সাতটি বছর নানান পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সার, মাটি, বীজতলার মান যাচাই, অন্যের ভূঁইচাষের পূর্ব অভিজ্ঞতা তো আছেই। একেই পুঁজি করে এবার নিজের হাতের চাষাবাস। এর মাধুর্যই আলাদা। মমতাটি শিশুর প্রতি পিতার বাৎসল্য সম প্রায়।
প্রথম প্রথম নানা বিপত্তি গেছে। ভোগান্তি আর কাকে বলে। একেবারে মাইজভাণ্ডারির গানের কথার মতো -- সিনায় সিনায় পাঠ। ঝুট-ঝামেলার প্রথম ভোগান্তি আল না দেওয়া নিয়ে। টানা ধান ক্ষেতে কার কতোটুকুই বা অধিকার? বুলবুলিতে ধান যাতে খুব না খায় সে জন্য চাই ঢেঁড়াকল। আবার ক্ষেতের চারপাশে যথেষ্ট শক্তপোক্ত বেড়াও থাকা জরুরি। ছাগকূলের আক্রমণ থেকে সুরক্ষা চাই তো!
তো, এই দারুণ নিদানকালে নিজস্ব ভূঁইটুকুতে আল দেওয়া শেষ। ফসলের ধরণ বুঝে ছোট ছোট ফলক বসানো গেছে। এরপরে প্রয়োজন মাফিক পরিচর্যা, জৈব সার প্রয়োগ, পরিমিত জলকাদার মিশ্রন, আগাছা বাছাই। এখন বেড়া বসানোর পাশাপাশি চলছে নতুন নতুন চাষবাসের প্রক্রিয়া। নতুন ধানের নতুন ফসল তোলার অপেক্ষায় প্রতিদিন সকাল-বিকাল ক্ষেতটিতে অহেতুক বারংবার ঢুঁ দিয়ে যাওয়া।
হুমায়ুন আজাদকে মনে পড়ছে।
ব্যর্থ না হওয়াটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড়ো ব্যর্থতা।
তো ব্যর্থ হওয়া একেবারেই চলবে না, বুঝলে উপেন? নইলে জমি কিনে নেওয়ার লোকের তো অভাব নেই!
স্বীকার করা ভালো, চাষের নতুন যাত্রায় আরো কয়েক সহ চাষার ছোট ছোট হ্যান্ডনোট খুব কাজে লেগেছে। এরমধ্যে পেশাদার কৃষক সুশান্ত করও কম করেননি। যেচে পরামর্শ দিয়েছেন। অনিয়মিতভাবে নিয়মত পদধূলি পড়েছে গরীব চাষার কীর্তি দর্শনে।
আগ্রহী সকলের শুভেচ্ছা প্রত্যাশী। নিমন্ত্রণ রইলো, অধমের ছোট্ট জমি-জিরাতটুকুতে দুদণ্ড বেড়িয়ে যাওয়ার।
...নিশ্চিত জানি, রাঙা প্রভাত আসবেই। জয় হবেই মুক্তচিন্তার, শুভ বুদ্ধির।
হ্যাপি ব্লগিং।।
___
ছবি: জলপাই বৃক্ষ, সেপ্টেম্বর ১৮৮৯, ভ্যান গখ, দি লাইফ।
No comments:
Post a Comment