বিপ্লব রহমান, ঢাকা: জঙ্গিগোষ্ঠির ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডে মুক্তমনা লেখক ও প্রকাশকরা কিছুতেই নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না বলে মনে করছেন সাংবাদিক ও লেখক জাহিদ নেওয়াজ খান।
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম’র সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় চ্যানেল আই’র বার্তা সম্পাদক ও সমাজ বিশ্লেষক জাহিদ নেওয়াজ খান অমর একুশে গ্রন্থমেলা, মুক্তচিন্তা চর্চা, সমাজ ভাবনা, নিজস্ব লেখালেখিসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘মুক্তচিন্তার মানুষগুলো এখানে আর নিরাপদ নয়। সেটার বহুমাত্রিক কারণ আছে। আঘাতটা যেমন জঙ্গিদের কাছ থেকে আসতে পারে, তেমনি এর মধ্যে আরো অনেক সমীকরণ থাকতে পারে। আমি অনেক ব্লগারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এটা বলেছেন, তারা যে শুধু জঙ্গিদের টার্গেট এমন নয়; জঙ্গিদের টার্গেট বলে এখানে অন্য সমীকরণেরও শিকার হতে পারেন তারা। এর মানে ভয়ের একটা সংস্কৃতি ঢুকে গেছে।’
‘এ শংকার মধ্যে বসবাস কতোদিন চলবে আমি জানি না। আদৌ আমরা এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো কি না, সেটাও নিশ্চিত নয়। তাই মুক্তচিন্তার মানুষগুলোর দেশত্যাগ হয়তো চলতেই থাকবে। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের মধ্যে কতোজন অভিজিৎ রায়ের (মুক্তমনা লেখক ও ব্লগার, গত বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি জঙ্গি হামলায় নিহত) মতো বুদ্ধিবৃত্তিক নতুন দরজা-জানালা খুলতে পারবেন, সে বিষয়েও আমার সংশয় আছে। তারপরও আমি বলবো, চাপাতির কোপে মৃত্যুবরণ করার চেয়ে কেউ বিদেশে শুধু ঘর-গেরস্থালি করলেও আমরা স্বস্তিতে থাকবো,’ যোগ করেন তিনি।
জঙ্গি হামলায় নিহত লেখক অভিজিৎ রায় ও প্রকাশক আরেফিন ফয়সাল দিপনের নামে এবারের বইমেলা উৎসর্গ করার প্রশ্নে জাহিদ নেওয়াজ বলেন, ‘এখানে মনে হয় আমরা একটা ভুল করছি। আমরা বোধহয় বাংলা একাডেমিকে বিপ্লবী কোনো সংস্থা ভাবছি। এ একাডেমি হয়তো জ্ঞানভিত্তিক বিষয়-আশয় নিয়ে কাজ করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলা একাডেমি কিন্তু সরকারি একটি সংস্থা। শেষ পর্যন্ত সরকারের দর্শনই বাংলা একাডেমি ধারণ করে। সেটা এখন আওয়ামী লীগের, যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিলো তখন বিএনপির। আমি বাংলা একাডেমির কর্মকর্তাদের কথা বলছি না। প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলা একাডেমি সরকারি দর্শনকে ধারণ করবে এটা স্বাভাবিক। সুতরাং, মেলাটি যে লেখক ড. অভিজিৎ আর প্রকাশক দিপনের নামে উৎসর্গ করা হবে না, সেটা মোটেই অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। এখানে সরকারের চাওয়া-না চাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
শুধু একুশের বইমেলায় নয়, বছরজুড়েই বই প্রকাশ ও কেনাবেচার সংস্কৃতি গড়ে তোলার ওপরেও জোর দেন এই সাংবাদিক ও লেখক। নিজস্ব পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বছরজুড়ে বই কেনাবেচার ব্যবস্থার চাইলেই করা সম্ভব। দিল্লীতে তো দেখেছি, প্রতি রোববার বইয়ের হাট বসে। হাজারো মানুষ সেখানে বই কিনতে যান। চাইলে এখানেও এটি সম্ভব। এক্ষেত্রে একটি কথা বলতে চাই। অনেকে শুধু বইমেলা কেন্দ্রিক বই প্রকাশ এবং বই কেনার অভ্যাসের সমালোচনা করেন। আমি কিন্তু শত নেতিবাচকের মধ্যেও এটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখতে চাই। দেখুন, যে মানুষটি সারাবছর একটিও বই কেনেন না, তিনিও বইমেলায় যান, এক বা একাধিক বই কেনেন। এখন যদি এ বইমেলাটি না থাকতো তাহলে কী হতো? এই মানুষটি হয়তো একটি বইও কিনতেন না, পড়তেনও না। এর মানে হচ্ছে, বইমেলা বই কেনা এবং কিছু পড়ার একটা উপলক্ষ।’
নতুন পাঠক ও প্রকাশক সৃষ্টির ওপরে জোর দিয়ে জাহিদ নেওয়াজ বলেন, ‘যদি উন্মুক্ত একটি জায়গা করা যায় যেখানে সারাবছর প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে শুক্র-শনিবার বইয়ের হাট বসে, তাহলে অবশ্যই কিছু মানুষ যাবেন, কিছু নতুন পাঠক গড়ে উঠবে এবং সেক্ষেত্রে শুধু বইমেলাকেন্দ্রিক না হয়ে সারাবছরই কিছু না কিছু বইও প্রকাশ হতে থাকবে। এ সাপ্তাহিক বইয়ের হাটটিকে জনপ্রিয় করতে মার্কেটিংটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।’
টেলিভিশন সাংবাদিকতার পাশাপাশি লেখালেখিকে কেন বেছে নিলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে জাহিদ নেওয়াজ বলেন, ‘আমি কিন্তু লেখক নই। মূলতঃ আমি সাংবাদিক, সঙ্গে লেখালেখি কিছু করি। কিন্তু লেখক আমাকে বলা যাবে না। লেখালেখির শুরুটা লেখা শেখার পর থেকেই। প্রথমে রাস্তাঘাটে যা দেখতাম, যেমন দেয়াল লিখন, সেগুলো পড়ার খাতায় লিখতাম। বাঙালিদের বেশিরভাগই ছড়া দিয়ে লেখা শুরু করে। সেখান থেকে কেউ কেউ সত্যিসত্যিই কবি হন, কবিতা লিখেন। ব্যর্থ কবিদের কেউ কেউ গদ্যসাহিত্যে আসেন। তার চেয়েও ব্যর্থরা সাংবাদিকতা করেন।’…
শৈশবেই ছড়া ও গল্প লেখালেখিতে হাতেখড়ি জানিয়ে তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর অল্পদিনের মধ্যেই সাংবাদিকতায় জড়িয়ে যাই। তবে লেখালেখিও কিছুটা চলতে থাকে। একদিকে সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোতে রিপোর্টের মতো কিছু লিখি, অন্যদিকে বিভিন্ন পত্রিকার সাহিত্য বা ছোটদের পাতায়। ‘দৈনিক দেশ’ পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন কবি হেলাল হাফিজ। তিনি একবার বলেছিলেন যে আমার লেখা প্রেমের গল্প তার খুব পছন্দ। এটা এখন পর্যন্ত আমার বড় অর্জন হয়ে আছে (হাসি)।’
জাহিদ আরো বলেন, ‘তবে বাস্তবতা হচ্ছে, ১৯৯২ সালে দৈনিক পত্রিকায় কাজ শুরু করার পর গল্প লেখা বন্ধ হতে হতে এক পর্যায়ে তা শূন্যে নেমে এসেছে। গত বিশ বছরে একটাও গল্প লেখা হয়নি। আমার লেখা শেষ গল্প ‘স্বরস্বতী’ নজরুল কবীর ছাপানোর জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার লিটল ম্যাগটি আর প্রকাশ হয়নি, গল্পটিও তিনি হারিয়ে ফেলেছেন।… এভাবে মৌলিক লেখা থেকে দূরে থাকার কারণে কখনোই আর বই প্রকাশ হয়নি। সহ-গবেষক হিসেবে কয়েকটি বইয়ে নাম আছে, সংকলন বইয়েও লেখা আছে বেশ কিছু। কিন্তু, নিজের কোনো বই ছিলো না এতোদিন।’
তিনি জানান, এবারের মেলায় প্রকাশ হয়েছে তার প্রথম বই। দ্বিতীয় বইটিও এখনো যন্ত্রন্থ, সেটিও প্রকাশ হবে বইমেলায়। প্রথম বই ‘শ্রাবণ’ প্রকাশ করেছে ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড: সামরিক ও গোয়েন্দা ব্যর্থতার প্রামাণ্য দলিল’। এর প্রচ্ছদ করেছেন প্রকাশক রবীন আহসান। বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ‘শ্রাবণ’র ৪৫০-৫১-৫২ নম্বর স্টলে বইটি পাওয়া যাবে।
এছাড়া তার আরো একটি বই ‘গণজাগরণে উন্মোচিত মুখোশ’ আসছে বইমেলায়। এর প্রচ্ছদ করেছেন কারিম। বইটি এখনো প্রকাশ হয়নি বলে দাম বলা যাচ্ছে না। এটি পাওয়া যাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ‘প্লাটফর্ম’ এর ৪৯২ নম্বর স্টলে। এছাড়া বাংলা একাডেমির ভবনের লিটল ম্যাগ চত্বরেও (স্টল নম্বর ৪৩) বইটি পাওয়া যাবে।’
নিজের বই প্রসঙ্গে জাহিদ নেওয়াজ বলেন, ‘প্রথম বইটি একটু গবেষণাধর্মী। আর দ্বিতীয়টি মুক্তমতের প্রকাশ। একটিও সাহিত্য নয়।’
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/বিআর/এফআর
- See more at: http://bangla.newsnextbd.com/article218976.nnbd/
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম’র সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় চ্যানেল আই’র বার্তা সম্পাদক ও সমাজ বিশ্লেষক জাহিদ নেওয়াজ খান অমর একুশে গ্রন্থমেলা, মুক্তচিন্তা চর্চা, সমাজ ভাবনা, নিজস্ব লেখালেখিসহ সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে মতামত তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, ‘মুক্তচিন্তার মানুষগুলো এখানে আর নিরাপদ নয়। সেটার বহুমাত্রিক কারণ আছে। আঘাতটা যেমন জঙ্গিদের কাছ থেকে আসতে পারে, তেমনি এর মধ্যে আরো অনেক সমীকরণ থাকতে পারে। আমি অনেক ব্লগারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা এটা বলেছেন, তারা যে শুধু জঙ্গিদের টার্গেট এমন নয়; জঙ্গিদের টার্গেট বলে এখানে অন্য সমীকরণেরও শিকার হতে পারেন তারা। এর মানে ভয়ের একটা সংস্কৃতি ঢুকে গেছে।’
‘এ শংকার মধ্যে বসবাস কতোদিন চলবে আমি জানি না। আদৌ আমরা এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবো কি না, সেটাও নিশ্চিত নয়। তাই মুক্তচিন্তার মানুষগুলোর দেশত্যাগ হয়তো চলতেই থাকবে। তবে শেষ পর্যন্ত তাদের মধ্যে কতোজন অভিজিৎ রায়ের (মুক্তমনা লেখক ও ব্লগার, গত বছর ২৬ ফেব্রুয়ারি জঙ্গি হামলায় নিহত) মতো বুদ্ধিবৃত্তিক নতুন দরজা-জানালা খুলতে পারবেন, সে বিষয়েও আমার সংশয় আছে। তারপরও আমি বলবো, চাপাতির কোপে মৃত্যুবরণ করার চেয়ে কেউ বিদেশে শুধু ঘর-গেরস্থালি করলেও আমরা স্বস্তিতে থাকবো,’ যোগ করেন তিনি।
জঙ্গি হামলায় নিহত লেখক অভিজিৎ রায় ও প্রকাশক আরেফিন ফয়সাল দিপনের নামে এবারের বইমেলা উৎসর্গ করার প্রশ্নে জাহিদ নেওয়াজ বলেন, ‘এখানে মনে হয় আমরা একটা ভুল করছি। আমরা বোধহয় বাংলা একাডেমিকে বিপ্লবী কোনো সংস্থা ভাবছি। এ একাডেমি হয়তো জ্ঞানভিত্তিক বিষয়-আশয় নিয়ে কাজ করে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাংলা একাডেমি কিন্তু সরকারি একটি সংস্থা। শেষ পর্যন্ত সরকারের দর্শনই বাংলা একাডেমি ধারণ করে। সেটা এখন আওয়ামী লীগের, যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিলো তখন বিএনপির। আমি বাংলা একাডেমির কর্মকর্তাদের কথা বলছি না। প্রতিষ্ঠান হিসেবে বাংলা একাডেমি সরকারি দর্শনকে ধারণ করবে এটা স্বাভাবিক। সুতরাং, মেলাটি যে লেখক ড. অভিজিৎ আর প্রকাশক দিপনের নামে উৎসর্গ করা হবে না, সেটা মোটেই অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। এখানে সরকারের চাওয়া-না চাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
শুধু একুশের বইমেলায় নয়, বছরজুড়েই বই প্রকাশ ও কেনাবেচার সংস্কৃতি গড়ে তোলার ওপরেও জোর দেন এই সাংবাদিক ও লেখক। নিজস্ব পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বছরজুড়ে বই কেনাবেচার ব্যবস্থার চাইলেই করা সম্ভব। দিল্লীতে তো দেখেছি, প্রতি রোববার বইয়ের হাট বসে। হাজারো মানুষ সেখানে বই কিনতে যান। চাইলে এখানেও এটি সম্ভব। এক্ষেত্রে একটি কথা বলতে চাই। অনেকে শুধু বইমেলা কেন্দ্রিক বই প্রকাশ এবং বই কেনার অভ্যাসের সমালোচনা করেন। আমি কিন্তু শত নেতিবাচকের মধ্যেও এটাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখতে চাই। দেখুন, যে মানুষটি সারাবছর একটিও বই কেনেন না, তিনিও বইমেলায় যান, এক বা একাধিক বই কেনেন। এখন যদি এ বইমেলাটি না থাকতো তাহলে কী হতো? এই মানুষটি হয়তো একটি বইও কিনতেন না, পড়তেনও না। এর মানে হচ্ছে, বইমেলা বই কেনা এবং কিছু পড়ার একটা উপলক্ষ।’
নতুন পাঠক ও প্রকাশক সৃষ্টির ওপরে জোর দিয়ে জাহিদ নেওয়াজ বলেন, ‘যদি উন্মুক্ত একটি জায়গা করা যায় যেখানে সারাবছর প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে শুক্র-শনিবার বইয়ের হাট বসে, তাহলে অবশ্যই কিছু মানুষ যাবেন, কিছু নতুন পাঠক গড়ে উঠবে এবং সেক্ষেত্রে শুধু বইমেলাকেন্দ্রিক না হয়ে সারাবছরই কিছু না কিছু বইও প্রকাশ হতে থাকবে। এ সাপ্তাহিক বইয়ের হাটটিকে জনপ্রিয় করতে মার্কেটিংটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আর এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।’
টেলিভিশন সাংবাদিকতার পাশাপাশি লেখালেখিকে কেন বেছে নিলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে জাহিদ নেওয়াজ বলেন, ‘আমি কিন্তু লেখক নই। মূলতঃ আমি সাংবাদিক, সঙ্গে লেখালেখি কিছু করি। কিন্তু লেখক আমাকে বলা যাবে না। লেখালেখির শুরুটা লেখা শেখার পর থেকেই। প্রথমে রাস্তাঘাটে যা দেখতাম, যেমন দেয়াল লিখন, সেগুলো পড়ার খাতায় লিখতাম। বাঙালিদের বেশিরভাগই ছড়া দিয়ে লেখা শুরু করে। সেখান থেকে কেউ কেউ সত্যিসত্যিই কবি হন, কবিতা লিখেন। ব্যর্থ কবিদের কেউ কেউ গদ্যসাহিত্যে আসেন। তার চেয়েও ব্যর্থরা সাংবাদিকতা করেন।’…
শৈশবেই ছড়া ও গল্প লেখালেখিতে হাতেখড়ি জানিয়ে তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর অল্পদিনের মধ্যেই সাংবাদিকতায় জড়িয়ে যাই। তবে লেখালেখিও কিছুটা চলতে থাকে। একদিকে সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলোতে রিপোর্টের মতো কিছু লিখি, অন্যদিকে বিভিন্ন পত্রিকার সাহিত্য বা ছোটদের পাতায়। ‘দৈনিক দেশ’ পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন কবি হেলাল হাফিজ। তিনি একবার বলেছিলেন যে আমার লেখা প্রেমের গল্প তার খুব পছন্দ। এটা এখন পর্যন্ত আমার বড় অর্জন হয়ে আছে (হাসি)।’
জাহিদ আরো বলেন, ‘তবে বাস্তবতা হচ্ছে, ১৯৯২ সালে দৈনিক পত্রিকায় কাজ শুরু করার পর গল্প লেখা বন্ধ হতে হতে এক পর্যায়ে তা শূন্যে নেমে এসেছে। গত বিশ বছরে একটাও গল্প লেখা হয়নি। আমার লেখা শেষ গল্প ‘স্বরস্বতী’ নজরুল কবীর ছাপানোর জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু তার লিটল ম্যাগটি আর প্রকাশ হয়নি, গল্পটিও তিনি হারিয়ে ফেলেছেন।… এভাবে মৌলিক লেখা থেকে দূরে থাকার কারণে কখনোই আর বই প্রকাশ হয়নি। সহ-গবেষক হিসেবে কয়েকটি বইয়ে নাম আছে, সংকলন বইয়েও লেখা আছে বেশ কিছু। কিন্তু, নিজের কোনো বই ছিলো না এতোদিন।’
তিনি জানান, এবারের মেলায় প্রকাশ হয়েছে তার প্রথম বই। দ্বিতীয় বইটিও এখনো যন্ত্রন্থ, সেটিও প্রকাশ হবে বইমেলায়। প্রথম বই ‘শ্রাবণ’ প্রকাশ করেছে ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড: সামরিক ও গোয়েন্দা ব্যর্থতার প্রামাণ্য দলিল’। এর প্রচ্ছদ করেছেন প্রকাশক রবীন আহসান। বইমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ‘শ্রাবণ’র ৪৫০-৫১-৫২ নম্বর স্টলে বইটি পাওয়া যাবে।
এছাড়া তার আরো একটি বই ‘গণজাগরণে উন্মোচিত মুখোশ’ আসছে বইমেলায়। এর প্রচ্ছদ করেছেন কারিম। বইটি এখনো প্রকাশ হয়নি বলে দাম বলা যাচ্ছে না। এটি পাওয়া যাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ‘প্লাটফর্ম’ এর ৪৯২ নম্বর স্টলে। এছাড়া বাংলা একাডেমির ভবনের লিটল ম্যাগ চত্বরেও (স্টল নম্বর ৪৩) বইটি পাওয়া যাবে।’
নিজের বই প্রসঙ্গে জাহিদ নেওয়াজ বলেন, ‘প্রথম বইটি একটু গবেষণাধর্মী। আর দ্বিতীয়টি মুক্তমতের প্রকাশ। একটিও সাহিত্য নয়।’
নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/বিআর/এফআর
- See more at: http://bangla.newsnextbd.com/article218976.nnbd/
No comments:
Post a Comment