ভাষার ওপর নিবিড় শিক্ষা ও উচ্চতর গবেষণায় জ্ঞানের আলো ছড়াচ্ছে ‘আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট’। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষানিকেতন বিগত চার দশকে পরিণত হয়েছে বিদেশি ভাষা শিক্ষার বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠানে। নিয়মিত গবেষণাপত্র প্রকাশ, আলোচনা সভা ও স্মারক বক্তৃতার আয়োজন, সুবিশাল পাঠাগার, ছাত্রবৃত্তি প্রদানের মতো অর্জনও কম নয় প্রতিষ্ঠানটির।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটে বাংলা ছাড়াও রয়েছে ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান, জাপানি, চীনা, আরবি, কোরিয়ান, ইতালিয়ান, ফারসি, রুশ, স্প্যানিশ ও টার্কিশ ভাষা শিক্ষার বিশেষ প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। এখানে একেকটি কর্মসূচিতে সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়ে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ব্যক্তিরা দূতাবাস, জাতিসংঘ মিশন, বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশ-বিদেশে বিভিন্ন পেশায় রাখছেন মেধার স্বাক্ষর। তবে ইনস্টিটিউটের বাংলা ভাষা শিক্ষার কর্মসূচিটি কেবলই বিদেশিদের জন্য। অন্যসব কর্মসূচি অবশ্য সবার জন্যই উন্মুক্ত। ইনস্টিটিউটটি পরিচালিত হচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে।
১৩টি ভাষার যেকোনোটির ওপর প্রশিক্ষণ শেষে শিক্ষার্থীদের সেখান থেকে দেওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ। ভাষার ওপর উচ্চতর গবেষণার (এমফিল, পিএইচডি) সুযোগও রয়েছে এখানে। এ জন্য যে সনদটি দেওয়া হয় সেটিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশ্বমানের এসব সনদ বহু বছর ধরে সমাদৃত হচ্ছে সর্বত্র। বিশেষ করে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার সনদটি ব্রিটিশ কাউন্সিল সমমানের।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে প্রথম খোলা হয়েছিল চীনা ও ফরাসি ভাষা শিক্ষার কর্মসূচি। সেটি ১৯৪৮ সালের কথা। ওই বিভাগে ১৯৫২ সালের মহান ভাষা আন্দোলনের বছরেই যুক্ত হয় জার্মান ভাষার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। ১৯৬৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে খোলা হয় বিদেশি ভাষা শিক্ষা বিভাগ। তখন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এসব কর্মসূচি স্থানান্তরিত হয় নতুন বিভাগটিতে। একে একে সেখানে যোগ হয় রুশ, তুর্কি, জাপানি, স্প্যানিশসহ মোট ছয়টি বিদেশি ভাষা শিক্ষার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি।
স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ সালের ১ জুলাই প্রতিষ্ঠা পায় ‘আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট’। তখন সব ভাষা শিক্ষার প্রশিক্ষণ কর্মসূচি স্থানান্তর করা হয় সেখানে। পরে শিক্ষার্থীদের আগ্রহে একে একে সেখানে যোগ হয় আরো সাতটি ভাষা শিক্ষার কর্মসূচি। বলা ভালো, একেকটি ভাষা শিক্ষার প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মেয়াদ এক বছর (১২০ ঘণ্টা)। এরপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেওয়ারও সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ইনস্টিটিউটটি প্রতিবছর প্রকাশ করছে একটি উচ্চমানের গবেষণা জার্নাল।
ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সুলতান আহমেদ কালের কণ্ঠকে জানান, আধুনিক ভাষা শিক্ষার ওপর সুযোগ তৈরি ইনস্টিটিউটের প্রধান লক্ষ্য। এর মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ সক্ষম হয়ে উঠতে পারেন বিদেশের কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনে। এ ছাড়া ভাষার ওপর নিবিড় গবেষণা ও উচ্চতর ডিগ্রি দিয়ে বিজ্ঞজন তৈরিও প্রতিষ্ঠানটির আরেকটি লক্ষ্য। তিনি বলেন, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট এরই মধ্যে পরিচিতি পেয়েছে বিদেশি ভাষা শিক্ষার একটি বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে। এর নেপথ্যে রয়েছে ছাত্র-শিক্ষকদের চার দশকের নিরলস শ্রম।
- See more at: http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2014/02/14/51988#sthash.tOiTQT3Y.dpuf
- See more at: http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2014/02/14/51988#sthash.tOiTQT3Y.dpuf
No comments:
Post a Comment