আন্তর্জাতিক বর্ণ সংকেতায়ন বা ইউনিকোডে বাংলা ভাষার লিপি যুক্ত হয়েছে বছর আটেক আগে। মুক্ত ইউনিকোড বাংলা ফন্ট অভ্র’র হাত ধরে এরপর অনলাইনে বাংলা ভাষার শুধুই এগিয়ে চলা। এ ভাষাতেই এখন তৈরি হচ্ছে জনমুখী নানা ওয়েবসাইট। বাংলাতেই গড়ে উঠেছে ইন্টারনেটভিত্তিক অসংখ্য সংবাদমাধ্যম বা নিউজ পোর্টাল। অভ্র ছাড়াও ইউনিকোডে যুক্ত হয়েছে আরো অনেক বাংলা ফন্ট। সাইবার বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে মহান একুশের অর্জন।
খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, বাংলায় নিউজ পোর্টাল ব্যবহারের ক্ষেত্রে ওপার বাংলার তুলনায় বাংলাদেশ বহুগুণে এগিয়ে গেছে। গত কয়েক বছরে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগের দাম কমে আসায় এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। কালের কণ্ঠসহ দেশের প্রধান সারির বাংলা সংবাদপত্রগুলোও বেশ কয়েক বছর ধরে অনলাইনে প্রচার করছে তাৎক্ষণিক সংবাদ ও ছবি। থাকছে ভিডিওচিত্রও। প্রতি মুহূর্তের সংবাদ ও বিনোদনের জন্য খবরপিপাসু সারা বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষীরা টেলিভিশন ছাড়াও এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন অনলাইন সংবাদকে।
পরিষেবামূলক বিভিন্ন ধরনের পোর্টালও বাংলা ভাষায় তৈরি হচ্ছে বাংলাদেশেই। এর মধ্যে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, পরিবেশ, জ্বালানি, অর্থনীতি ইত্যাদি বিষয়ের পোর্টাল বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
ইন্টারনেট ব্যবহারবিষয়ক জরিপ সংস্থা আলেক্সার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় নিউজ পোর্টাল চার হাজারের বেশি। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নিউজ পোর্টালের সংখ্যা শতাধিক। এসব ওয়েবসাইটের নিবিড় পাঠক (ইউনিক ভিউয়ার) সংখ্যা এরই মধ্যে ছাড়িয়েছে ১৫ লাখ।
ইন্টারনেট ব্যবহারবিষয়ক জরিপ সংস্থা আলেক্সার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে বাংলা ভাষায় নিউজ পোর্টাল চার হাজারের বেশি। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ নিউজ পোর্টালের সংখ্যা শতাধিক। এসব ওয়েবসাইটের নিবিড় পাঠক (ইউনিক ভিউয়ার) সংখ্যা এরই মধ্যে ছাড়িয়েছে ১৫ লাখ।
বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) তথ্য অনুযায়ী, দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা তিন কোটি ছাড়িয়েছে। মোবাইলে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন প্রায় দুই কোটি ৮৭ লাখ মানুষ।
অন্যদিকে প্রতিবেশী ভারতে জি-মিডিয়া গ্রুপের ২৪ ঘণ্টা ডটকম ছাড়া বাংলায় তেমন কোনো নিউজ পোর্টালই নেই। আলেক্সা জরিপে এই সাইটটির অবস্থান ভারতে ৮৩ তম। তাজা খবরও এতে পাওয়া যায় না। ওপার বাংলায় প্রধান সারির সব দৈনিকেরই অনলাইন সংস্করণ রয়েছে। তবে শীর্ষ দৈনিক ‘আনন্দবাজার’ ও ‘বর্তমান ছাড়া’ বাংলা ভাষার অন্যান্য সংবাদপত্রে তাৎক্ষণিক সংবাদ প্রচারের ব্যবস্থা নেই। আবার এসব সাইটেও তাৎক্ষণিক সংবাদ প্রচারের সংখ্যা খুব সীমিত।
ওপার বাংলার লেখক ও ব্লগার শুভ্র ভট্টাচার্য কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষিত মেধাবী ছেলেমেয়েদের প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে বাংলা ভাষা ত্যাগ। মধ্যম মেধার ছেলেমেয়েরা চাকরি ও পেশার ক্ষেত্রে দিল্লি-মুম্বাইমুখী। এ ছাড়া পশ্চিমবঙ্গের আরেক রঙ্গ হলো- বাংলা ভাষার প্রতি মুখ বেঁকিয়ে নাক সিটকিয়ে ইংরেজি-হিন্দিতে কে কত বড় পণ্ডিত তা জাহির করতে শিক্ষিত ব্যক্তিরাও তৎপর। ডেস্কটপ, ল্যাপটপের অভাব নেই। শুধু বাংলা লেখার উপায়টাই তাদের জানা নেই বিশেষ। হাতে হাতে মোবাইল। কিন্তু এসএমএস করতে এরা রোমান হরফেই বেশি স্বচ্ছন্দ। যে বাঙালি নিজেদের মধ্যে ইংরেজিতে কথা বলে গর্বিত হয়, তাদের কাছে আর আশা করার কী থাকতে পারে।’
- See more at: http://www.kalerkantho.com/print-edition/first-page/2014/02/11/50955#sthash.AyOnZbLc.dpuf
No comments:
Post a Comment