“রাত্তির ঘন হলে জমে উঠতে থাকে শব - দুদিন আগেই বর্জন করেছিলে যাকে, সেই প্লাস্টিক ব্যাগ তোমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে ঘিরে রেখেছে - প্রিয়জন ঘরে বন্দী - রাষ্ট্রীয় রক্ষীর সাথে ভ্যানে চড়ে চলেছ এমন দূরে, আর ফিরে আসা নেই - সে এক সময় যা ধকল গিয়েছে, চুপ করে বসে মনে পড়ে আর?” ... (মারণাস্ত্র সবক্ষেত্রে দৃশ্যমান নয়/বিষাণ বসু)
আসন্ন শীতকালে চলমান মহামারি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি আরো অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এক ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শীতকাল আসন্ন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটতে পারে। আমাদের এ মুহূর্ত থেকেই তা মোকাবেলার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে।
এদিকে, কোভিড পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ফের সংক্রমণ বাড়ায় আবার হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। বাংলাদেশে এখন সংক্রমণের চিত্র প্রায় স্থিতিশীল হলেও ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মতো সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে একইদিন সতর্ক করেছে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরী পরামর্শক কমিটি। ২০ সেপ্টম্ববর রাতে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লাহর পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই শঙ্কার কথা জানিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর জোর দেওয়া হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক, অণুজীব বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. সানিয়া তাহমিনা সাংবাদিকদের বলেন, করোনা সংক্রমণ গত বছর শুরু হয়েছিল শীতকালেই, ডিসেম্বর মাসে। তখন দেখা গেছে, শীতপ্রধান দেশগুলোতে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছিল। ফলে সারা বিশ্বেই শীতকালে ভাইরাসের প্রকোপ আবার বেড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এরইমধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, আগামী শীত মৌসুমে মহামারি আরও মারাত্মক রূপ নিতে পারে। বিশেষ করে শীতের আগে থেকেই উত্তর গোলার্ধের দেশগুলোয় সংক্রমণ আবার বাড়তে শুরু করেছে।
প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, মহামারী পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে বর্তমানে জনসাধারণের ভেতরে যে রকম চরম উদাসীনতা দেখা যাচ্ছে, এ পরিস্থিতিতে আসন্ন শীত মৌসুমে করোনার দ্বিতীয় দফার হামলা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সক্ষম কী না?
ব্রতকথার শেষে ছোলাটুকু ভিজছিল স্যাভলনের জলে..
“এমনি করেই মুখোশ বেঁধে আমরা খেতে বসলাম রেস্তোরাঁয় - আর ওয়েটার দস্তানার আড়াল থেকে বের করে আনল মেন্যুকার্ড - মনে পড়ে, তুমি ভয় পেয়ে গেছিলে, কেননা এমন দস্তানার আড়াল থেকে হামেশাই ঝলসে ওঠে ছুরি - আর এই আড়াই মাস ধরে আর কিছু না হোক, ওর'ম সিনেমা তুমি দেখে ফেলেছ হাজার।
অথচ, অস্ত্র মাত্রেই সর্বদা দৃশ্যমান হবে, এমন তো নয়। তুমি তো জানতেই, লুকিয়ে থাকা মারণাস্ত্রের খোঁজে ঘটে গিয়েছে আস্ত যুদ্ধ সব - ঠিকই, সেসব মিথ্যে ছলনা - তবু, তার পরেও ভেবেছিলে, অস্ত্র যখন চোখে পড়ছে না, অত ভয়ের কিছু নেই। ব্রতকথার শেষে ছোলাটুকু ভিজছিল স্যাভলনের জলে - ছোলা বেড়ে উঠছিল স্যাভলনে আর তোমার নিশ্চিন্ততায় - সে এক দেখার মত ঘটনা বটে!!(বিষাণ)
বাংলাদেশে ২০ সেপ্টেম্বর একদিনে এক হাজার ৫৪৪ জন নতুন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত কিছু দিন ধরেই এই সংখ্যাটি দেড় থেকে দুই হাজারের মধ্যে থাকছে। দেশে সর্বোচ্চ চার হাজার ১৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ জুলাই।
আর মহামারি পরিস্থিতির সাড়ে ছয় মাস পর দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৪৮ হাজার ৯১৬ জনে, যা নিয়ে বিশ্বে পঞ্চদশ অবস্থানে বাংলাদেশ। মারা গেছে চার হাজার ৯৩৯ জন।
স্মরণ করা ভাল, এ দেশে করোনা আক্রান্ত প্রথম রোগী গত ৮ মার্চ চিহ্নিত হওয়ার পর সংক্রমণরোধে যথাযথ লকডাউনের পরিবর্তে বেশ কয়েক দফায় রাষ্ট্রীয়ভাবে “সাধারণ ছুটি” ও গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে তৈরি পোশাক কারখানা খুলে দিলে রোগীর সংখ্যা দ্রুতই বাড়তে থাকে। সে সময় এক মাসের মধ্যে রোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে যায়। আবারো মে মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ঈদ উপলক্ষে দোকান-পাট, কারখানা খোলা এবং অন্যান্য ছাড়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছেই। আর গণপরিবহন বন্ধ রেখে অন্তত দুদফায় পোশাক কারখানা খুলে দিয়ে হাজার হাজার পরিযায়ী নারী-পুরুষ শ্রমিককে চৈত্র মাসের খর রোদের ভেতর শত শত মাইল হাঁটিয়ে এনে কাজে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়! এই শ্রমিক নির্যাতনের বিচার তো দূরের কথা, দায়ীদের কোনো কৈফিয়ৎ-ও তলব করা হয়নি।
মার্চে দেশে প্রথম করোনা ওয়েভ আছড়ে পড়ার পর দেশজুড়ে লকডাউন, সঙ্গ নিরোধ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর কড়াকড়ি ও জনসচেতনতা দুইই দেখা গিয়েছিল। সে সময় টানা ৬৬ দিন লকডাউন শেষে গত ৩১ মে থেকে “স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে” সরকারি-বেসরকারি অফিস, গণপরিবহন, দোকান-পাট, হাট-বাজারসহ সকল কিছু খুলে দেওয়া হয়। আন্তঃজেলা ও লোকাল বাস-মিনিবাসে শতকরা ৬০ ভাগ ভাড়া বাড়িয়ে এক সিটে একজন যাত্রী- এই নীতিতে চালু করা হয় গণপরিবহন। তবে বাসে ওঠানামার ক্ষেত্রে মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার শর্ত মোটেই মানা হয়নি। একই সময় প্রধান প্রধান রুটে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু করা হয় ট্রেন। ওদিকে লঞ্চে ভাড়া না বাড়লেও ডেকে যাত্রী তোলা হচ্ছে গাদাগাদি করে।
লকডাউন, লকঅন অথবা ভাইরাসের সাথে বসবাস
“তার আগেই অবশ্য আমরা দেখেছি রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলেছে মানুষ - আর পুলিশ তাদের তাড়া করেছে। তখন রেললাইন দিয়ে হেঁটে চলেছে মানুষ - ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েছে লাইনেই - রেলগাড়ি এসে তাদের চাপা দিয়ে চলে গিয়েছে। প্রখর রৌদ্র এড়িয়ে যখন রাত্তিরকে বেছে নিয়েছে বাড়ি ফিরবে বলে - নাইট কার্ফ্যু জারি করে দেওয়া গিয়েছে দিব্যি।
বিরক্ত লাগছিল, সিরিয়াসলি, একঘেয়ে লাগছিল - রেললাইনে ছড়িয়ে থাকা রুটি - রেলস্টেশনে মৃতা মায়ের শরীর ধরে ঝাঁকাতে থাকা শিশু - ওই রেলের গাড়ি, ওই স্টেশন ধরেই কতবার ছুটে গিয়েছি স্বপ্নের দেশে - তখনও তো এরা ছিল, এই দেশে, এই আমাদেরই আশেপাশে - জানতেও পারিনি।” (বিষাণ)
বিশ্বের দেশে দেশে দেখা গেছে, করোনা মৃত্যু ও সংক্রমণ কমতে থাকলে, রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে আনা গেলে ধাপে ধাপে লকডাউন তুলে নিতে। এ পর্যন্ত কোনো দেশই সংক্রমণের চূড়ান্ত সময়ে লকডাউন তুলে নিয়ে মহামারীকে স্বাগত জানায়নি। এ দিক থেকে বাংলাদেশ ব্যতিক্রম।
মহামারি মোকাবেলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির পরামর্শ ছিল সংক্রমণের চূড়ান্তকাল জুন-জুলাইয়ে আরো বেশি কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার। কিন্তু তাদের পরামর্শকে বিবেচনা না এনে “সাধারণ ও খেটে খাওয়া মানুষের কথা বিবেচনায় এনে অর্থনীতি সচল” তথা লকডাউন তুলে ফেলা কতটুকু যৌক্তিক হয়েছে, তা হয়তো নিকট ভবিষ্যতই বলতে পারে!
তবে সরকার পক্ষের যুক্তিও একেবারে ফেলে দেওয়ার মতো নয়। সাধারণ, খেটে খাওয়া মানুষকে তো বাঁচাতে হবে। সচল করতে হবে অর্থনীতির চাকা। অন্যদেশ, মহামারী পরিস্থিতে মানুষকে ঘরে থাকতে হয়, আর আমাদের দেশে জীবনের তাগিদে জীবিকায় নামতে ঘরের বাইরে বেরুতে হয় সাধারণ মানুষকে।
সবশেষ গত আগস্টে করোনা পরিস্থিতি স্থিতিশীল – এমন সরকারি ঘোষণায় শিথিল করা হয় সব নিয়মকানুন। ক্রমেই অফিস-আদালত, যানবাহন, দোকানপাট, মার্কেট ও শপিং কমপ্লেক্সে সব ধরণের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত করোনা আপডেট সংক্রান্ত অনলাইন বুলেটিন। চালু করা হয় নিয়মিত করোনা আপডেট সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি। ক্রমেই কমে আসে করোনা সচেতনতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত মিডিয়ায় সরকারি-বেসরকারি প্রচারণা।
পর্যবেক্ষণ বলছে, মিডিয়ার কল্যানে প্রথমদিকে করোনা নিয়ে জনসাধারণের ভেতর যে ভীতি সঞ্চার হয়েছিল, সে ভীতি এখন আর নেই। এখন সবাই বুঝে গেছেন, ছোঁয়াচে জ্বরটিকে এতো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তাছাড়া সচেতনতা ও চিকিৎসায় সংক্রমিত ব্যক্তি অধিকাংশই সুস্থ্ হয়েছে ওঠেন।
“তারও অনেক আগে, আমরা নিজেদের কথা স্যানিটাইজ করতে শিখেছিলাম। অর্থাৎ কী বললে ভালো শোনায়, কেমন মুখে কোন কথাটা বললে মানায় দিব্যি - কোনটি বলতে পারলে নিজের ক্ষতি নেই, এসবই ছিল আমাদের আজীবন শিক্ষাক্রমে। কাজেই, যখন হাত স্যানিটাইজ করতে বলা হল, ঘাবড়াই নি একেবারেই। এই তো সেদিনই হাসতে হাসতে বলছিলে, মুখটাকেই যখন আটকাতে পেরেছি, হাত তো নস্যি!!
অতএব, আমরা হইহই করে বাসে চেপে বেরিয়ে এলাম জাদুঘর - ডোডোপাখির দিকে চোখ টিপে বললাম, সি ইউ দেন - চিড়িয়াখানার শিম্পাঞ্জিটা আমাদের দেখে হইহই করে উঠল, মানুষ না দেখে দেখে বড্ডো ক্লান্ত ছিল সে-ও - ভিক্টোরিয়ার ঘাসগুলো বেড়ে উঠেছে অনেকটা এরই মধ্যে, বসতে গেলে একটু অস্বস্তিই হয় - সে হোক, আমাদের হাতে দস্তানা, মুখে ঢাকনা আঁটা। আসলে, ভুলে গেছিলাম, মারণাস্ত্র সবক্ষেত্রে দৃশ্যমান নয়।”
তবে সবচেয়ে আশংকার কথা এই যে, করোনা নিয়ে জনসাধারণের ভীতি কেটে যাওয়ার পাশাপাশি প্রায় ভেস্তে গেছে মহামারি নিয়ে সব ধরণের স্বাস্থ্য সচেতনতা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, আর কিছু না হোক শুধু মাস্ক ব্যবহার সর্বত্র বাধ্যতামূলক করা গেলেও অনেকটা করোনা মোকাবেলা করা যেত। বিশেষ করে বয়স্ক এবং যারা উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিকস, হৃদরোগ, হাঁপানিসহ নানা জটিল রোগে ভুগছেন, তারা কোভিড-১৯ আক্রান্ত হলে বেশী ঝুঁকিতে পড়েন।
কিন্তু দেখা গেছে, ৫০ শতাংশেরই বেশী মানুষ এখন আর মাস্ক ব্যবহারে আগ্রহী নন। আবার যারা মাস্ক পড়ছেন, তাদের অনেকেই তা ঝুলিয়ে রাখছেন চিবুকের নীচে।
জনে জনে কথা বলে দেখা গেছে, মাস্ক না পড়ার পেছনে বেশীরভাগই যুক্তি হচ্ছে, গরম লাগে! আবার অনেকে বলেন, শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। আর একটি দলের যুক্তি হলো, আল্লাহ আছে না!
লকডাউনের শুরুতে পুলিশ, র্যাব ও সেনা বাহিনী টহল গাড়ি থেকে মাস্ক ব্যবহার, বার বার শাবন-পানিতে হাত ধোয়া ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চলাসহ স্বাস্থ্যবিধি সংক্রান্ত মাইকিং, লিফলেটিংসহ নানা প্রচারণায় অনেকটাই সচেতনতা বেড়েছিল।
কিন্তু লকঅন বা জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়ায়, আম জনতার ভেতরে প্রচ্ছন্ন এই ধারণা সৃষ্টি হয়েছে যে, মহামারি পরিস্থিতি আর নেই, দেশ করোনার ছোবল থেকে মুক্ত হয়েছে!
এ প্রেক্ষাপটে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ স্কুল-কলেজ শীত মৌসুমে খুলে দেওয়া আদৌ সম্ভব হবে কি না? অনলাইন ও টেলিভিশন ক্লাস ঢাকার বাইরে এবং অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের জন্য মোটেই ফলপ্রসু নয়, এখবরও পুরনো। সেক্ষেত্রে কী হবে ভবিষ্যত প্রজন্মের শিক্ষার ভবিষ্যত?
আর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে সর্বত্র যে উদাসীনতা দৃশ্যমান, শীত মৌসুমে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বাংলাদেশে আছড়ে পড়লে রাতারাতি কী আবারো স্বাস্থ্যবিধি মানায় কড়াকড়ি আরোপ সফল হবে?
“আসলে, ভুলিয়ে দিয়েছিলে, মারণাস্ত্রের কথা সবসময় বলতে থাকলে শুনে শুনে ক্লান্ত হয়ে যেতে হয়।
আসলে, অনেক অনেক দিন ধরে দম আটকে বেঁচে থাকতে থাকতে সবাই ভয়ে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল - আর ভয় ব্যাপারটা সংস্কারে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল, যা মানলেও হয়, আবার না মানলেও আধুনিকতার হাততালি মেলে।
অতএব, রাত্তির ঘন হলে জমে উঠতে থাকে শব - দুদিন আগেই বর্জন করেছিলে যাকে, সেই প্লাস্টিক ব্যাগ তোমাকে আষ্টেপৃষ্ঠে ঘিরে রেখেছে - প্রিয়জন আর ঘরে বন্দী নয় - তবু রাষ্ট্রীয় রক্ষীর সাথে ভ্যানে চড়ে চলেছ এমন দূরে, আর ফিরে আসা নেই...” (বিষাণ)
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, বিরাজমান করোনা পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার কোনো রকম সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা বা কৌশল ছাড়া লকডাউন তুলে ফেলার ফলে সংক্রমনের ঝুঁকিসহ দীর্ঘমেয়াদে জীবন ও জীবিকার সংকটে শুধু দরিদ্র ও সাধারণ নাগরিকরাই পড়বেন না, বরং সার্বিকভাবে সকলকেই মহাবিপদের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে।
আর এতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ শুরু হলেও অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে বাংলাদেশ থাকবে বিচ্ছিন্ন। এতে এই করোনা পরবর্তী অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তিও হারাবে।
--
ছবি : শিল কড়ই, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অমিতা চক্রবর্তী
No comments:
Post a Comment